নিজস্ব প্রতিবেদক—–
বেলাব উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের সুটুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অ্যাডহক কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসি বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের এক মাস অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম ক্ষোভ।
অভিযোগকারীরা জানান,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটিকে নিয়ে সম্পূর্ণর্ বে-আইনীভাবে ৩ জন দাতা সদস্য নিয়োগ করেছেন। অথচ অ্যাডহক কমিটি দাতা সদস্য নিয়োগ করার এখতিয়ার নেই। দাতা সদস্য নিয়োগ করবে বিদ্যালয়ের স্থায়ী কমিটি। বিধি অনুযায়ী ১৮০ দিনের আগে কোন দাতা সদস্য ভোটার হতে পারবেন না। কিন্তু মাত্র ৭৮ দিনেই জাহাঙ্গীর আলম,মোর্শদ মিয়া ও আবুল কাশেমকে দাতা সদস্য করে ভোটার বানানো হয়েছে।
আগামীকাল সোমবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন হবার কথা। উক্ত নির্বাচনে প্রধান শিক্ষকের পক্ষের ভোটের পরিমান বাাড়ানোর জন্য সম্পূর্ণ বে-আইনীভাবে পাশ্ববর্তী মনোহরদী উপজেলার কাটাবাড়িয়া আফাজউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান অধ্যায়নরত ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাইমা আক্তার ও পোড়াদিয়া মারকাযুল উলূম আয়েশা খাতুন মহিলা মাদরাসা ও এতিমখানার হাফিজিয়াতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারকে অত্র বিদ্যালয়ে ভর্তি করে তাদের অভিভাবককে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
আগামীকালকের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে আগ্রহী একাধিক অভিভাবক জানান,প্রধান শিক্ষক ও অ্যাডহক কমিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার দিন ধায্য করে চলতি মাসের ১৩ তারিখ হতে ১৬ তারিখ পর্যন্ত। উক্ত মনোনয়ন ফরম কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে সংগ্রহ করার কথা বলে। কিন্তু উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ১৫ জুলাই ও ১৬ জুলাই শুক্রবার ও শনিবার থাকায় ব্যাংক বন্ধ থাকার কারনে অনেক অভিভাবক মনোনয়ন ফরম ক্রয় করতে পারেনি। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা বর্তমান নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে নতুন করে নির্বাচন করার দাবি জানান।
সরেজমিনে অত্র বিদ্যালয়ে গতকাল সকালে গেলে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। উনার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে রাতে অন্য এক সাংবাদিকের ফোন রিসিভ করে তিনি জানান,বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ পরিপত্র অনুযায়ীই ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন করছেন তিনি।
এলাকাবাসির পক্ষে অভিভাবক মোঃ কাজল মিয়া বলেন,অত্র বিদ্যালয়ের ভোটার তালিকায় অনিয়ম ও দাতা সদস্য নিয়োগ এবং অভিভাবকদের ভোটার তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমাদের অভিযোগ এ নির্বাচন স্থগিত করে পূণরায় যেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করে।
এলাকাবাসির পক্ষে সাব্বির আহমেদ ভূইয়া কমল বলেন,বিদ্যালয় কতর্ৃপক্ষ অ্যাডহক কমিটিকে নিয়ে তাদের প্যানেল শক্ত করার জন্য সম্পূর্ণ গোপনে এবং বে-আইনীভাবে তিনজন দাতা সদস্য টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করেন। যা আমরা পরবর্তীতে জানতে পারি। এছাড়া ভোটার তালিকায় অনিয়মসহ একাধিক অনিয়ম থাকায় আমি আলাদাভাবেও প্রধান শিক্ষক ও বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেই। কিন্তু আজও পর্যন্ত এর কোন সুরাহা পায়নি। আগামীকাল সোমবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। আমার দাবি যেহেতু অনিয়ম করা হয়েছে তাই এ নির্বাচন স্থগিত করে পূণরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হোক।
জেলা স্কুল এন্ড কলেজ সমিতির নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন,কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের ১৮০ দিনের পূর্বে অ্যাডহক কমিটি কখনো দাতা সদস্য নিতে পারেনা। এটা সম্পূর্ণ বে-আইনী।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মতিউর রহমান নরসিংদী পোস্টকে জানান, সুটুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে যা হচ্ছে তা নিয়মমাফিকই হচ্ছে তবে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র মিত্র বলেন ঠিক এর বিপরীত তিনি জানান,বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ পরিপত্র অনুযায়ী,১৮০ দিনের আগে কোন দাতা সদস্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। নিয়মবহির্ভূত এ নির্বাচন না করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply